গলদা চিংড়ির প্যাকিং ও পরিবহণ পদ্ধতি

এসএসসি(ভোকেশনাল) - শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-২ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | NCTB BOOK

প্রাচীনকাল থেকেই মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য বিভিন্ন ধরনের প্যাকিং সামগ্রী ব্যবহার করে পরিবহণ করা হয়। যেমন- কাঠের বাক্স, চামড়া ও কাপড়ের ব্যাগ, মাটির পাত্র ও বান্ডিল তৈরির জন্য রশি ইত্যাদি । যথাযথভাবে পণ্য সংরক্ষণ, সুষ্ঠ পরিবহণ ও হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে সহজতর করা ও সর্বোপরি পণ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই হলো প্যাকিং এর মূল উদ্দেশ্য। মৎস্য পণ্য পরিবহণ করার জন্য বর্তমানে ধাতুর তৈরি পাত্রের সাথে সাথে গ্লাস, কাগজ ও প্লাস্টিক দ্বারা তৈরি পাত্র ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাধারণত তাজা চিংড়ি প্লাস্টিক বাক্স বা খাদযুক্ত বাক্সে প্যাকিং করে পরিবহণ করা হয়। প্লাস্টিক বাক্স হালকা, শক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত বিধায় বর্তমানে প্লাস্টিক বাক্সের ব্যবহার অত্যধিক।

অধিক পরিমাণে তাজা মাছ ও ফ্রোজেন চিংড়ি প্যাকিং এর ক্ষেত্রে সাধারণত রেসিন করা কাগজের মন্ডের বাক্স ব্যবহার করা হয়। তবে ফাইবার বোর্ড বাক্স ও করোগেটেড বোর্ড কার্টুন বেশি ব্যবহৃত হয়, কারণ এগুলোর উপর পলিথিনে আবৃত থাকে। এছাড়া ব্লক ফ্রোজেন প্যাকিং এর ক্ষেত্রে খোলস ছাড়ানো চিংড়ি ফাইবার বোর্ড কার্টুন দিয়ে প্যাকেট করা হয়। সমস্ত প্যাকেটটি ফ্রোজেন করা হয় ফলে প্যাকেট পণ্যকে রক্ষা করে এবং শক্ত বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্লক ফ্রোজেন প্যাক খুব সহজেই সংরক্ষণ ও পরিবহণ করা যায়। এ পদ্ধতির অসুবিধা হলো প্যাকেটের একটা চিংড়ি বের করতে হলে সমস্ত বরফ গলাতে হয়। তবে আইকিউএফ (Individual Quick Freezing) পদ্ধতিতে চিংড়ি সংরক্ষণ খুচরা বিক্রেতা এবং সরবরাহকারীদের নিকট খুবই জনপ্রিয় কারণ এর ফলে প্রয়োজন অনুযায়ী চিংড়ি বিক্রি ও সরবরাহ করা যায়। আইকিউএফ পদ্ধতিতে খোলস ছাড়ানো চিংড়ি ও মাছ প্যাকেট করা হয়। চিংড়ি পরিবহনকালীন বিবেচ্য বিষয়সমূহ হলো-

  • বরফের পানিতে ঠান্ডা করা আস্ত চিংড়ি কুচি বরফের মধ্যে প্লাস্টিকের বাক্সে ইনস্যুলেটেড (তাপনিরাধেক) ট্রাক বা ভ্যানে পরিবহন করা; 
  •  দিনের বেলায় সুর্যের আলো ও তাপের মধ্যে খোলা নৌকা, ভ্যানগাড়ী, রিকশা বা সাইকেলে চিংড়ি পরিবহন না করা; 
  • সব সময় চিংড়ির বাক্স ছায়াযুক্ত ঠান্ডা জায়গায় রাখা, পরিবহনে কত সময় লাগবে তা বিবেচনা করে বরফ ও চিংড়ির অনুপাত নির্ধারণ করা। 
  • সাধারণত চিংড়িও বরফের অনুপাত ১:১ হয়। দিনের তাপমাত্রাও এ ক্ষেত্রে একটি বিবেচ্য বিষয়
  • পরিবহনের সময় চিংড়িতে যেন তাপ না লাগে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা; 
  • প্যাকিং সামগ্রী হিসেবে বাঁশের ঝুড়ি, হোগলা পাটি, চট ও কলাপাতা ব্যবহার না করা। এক্ষেত্রে ফুড গ্রেডেড প্লাস্টিকের বাস্কেট ব্যবহার করতে হবে;
  • ধরার পর যথাসম্ভব অল্প সময়ের মধ্যে চিংড়ি কারখানায় পৌঁছানো, এবং
  • পরিবহনের পর পরিবহন যান ও চিংড়ির বাক্স উপযুক্ত সাবান, ডিটারজেন্ট ও জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে ফেলা।
Content added By

আরও দেখুন...

Promotion